০৮:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫, ২৭ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোনাবাড়ী নতুন বাজারে পুলিশের মদদেই চলছে অবৈধ গ্যাস ব্যবসা?

  • দৈনিক সময়ের কথা
  • প্রকাশিত: ১২:৫৪:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫
  • ৫৪ বার দেখা হয়েছে

গাজীপুর প্রতিনিধি:
গাজীপুরের নতুন বাজার এলাকায় লিটন গ্যাস ডিস্ট্রিবিউটর কোম্পানি লিমিটেড কর্তৃক অবৈধভাবে গ্যাস সিলিন্ডারে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এতে পরিবহন চালকরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন, কারণ সিএনজি স্টেশনগুলোতে পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহ না থাকায় যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।

অবৈধ ব্যবসা, পরিবহন চালকদের দুর্ভোগ

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লিটন টাটা গ্যাস পাম্প থেকে নিয়মিতভাবে সিএনজি সরবরাহের বদলে অবৈধ উপায়ে গ্যাস সিলিন্ডারে ভরে বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে সিএনজি চালিত গণপরিবহন ও অন্যান্য যানবাহনের চালকরা নির্ধারিত মূল্যে গ্যাস পাচ্ছেন না। এতে ক্ষতির মুখে পড়ছেন গণপরিবহন চালক ও মালিকরা, পাশাপাশি যাত্রীদেরও দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

একজন সিএনজি চালক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা গ্যাস নিতে এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করি, কিন্তু গ্যাস পাই না। অথচ, এখানে অবৈধভাবে সিলিন্ডারে গ্যাস ভরে বাইরে বিক্রি করা হচ্ছে। প্রশাসন কিছু বলছে না, তাই এরা যা খুশি তাই করছে।”

প্রশাসন নীরব, পুলিশের সাড়া নেই

ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে নতুন বাজার লিটন টাটা গ্যাস পাম্পে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে প্রায় দশটি গাড়ি গ্যাসের জন্য অপেক্ষা করছে, তবে গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না। এ সময় পাঁচটি গাড়ি আটকে রাখা হয় এবং স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা কোনাবাড়ী থানার সিনিয়র অফিসার মোঃ নজরুল ইসলামকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি অবহিত করেন।

তিনি জানান, “ট্রিপল নাইন থেকে দুটি কল এসেছে, আমরা পুলিশ পাঠাচ্ছি।” কিন্তু দীর্ঘ এক ঘণ্টা অপেক্ষার পরেও পুলিশের কোনো উপস্থিতি দেখা যায়নি। এরপর আবারও ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।

এরপর ট্রিপল নাইন-এ ফোন দিয়ে পুলিশের সহযোগিতা চাওয়া হলে, সেখান থেকে থানায় কথা বলা হয়। তবে দেড় ঘণ্টা অপেক্ষার পরেও পুলিশের কোনো কার্যকর ব্যবস্থা দেখা যায়নি। পুনরায় কোনাবাড়ী থানায় যোগাযোগ করলে জানানো হয় যে, তারা সেনাবাহিনীর সঙ্গে ডিউটিতে আছেন, তাই ঘটনাস্থলে যেতে পারবেন না।

অভিযোগ: পুলিশের মদদেই চলছে অবৈধ গ্যাস ব্যবসা?

স্থানীয়দের অভিযোগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যদি ব্যবস্থা নিত, তাহলে এভাবে দিনের পর দিন অবৈধভাবে গ্যাস বিক্রি সম্ভব হতো না। বরং পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা দেখে বোঝা যাচ্ছে, তারা কোনো না কোনোভাবে এই ব্যবসার সঙ্গে লিয়াজু করে চলছেন।

এক পরিবহন মালিক বলেন, “আমরা পুলিশের সহযোগিতা চাই, কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা নেয় না। এটা স্পষ্ট, তারা এই অবৈধ ব্যবসার পেছনে মদদ দিচ্ছে।”

দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বড় বিপর্যয়ের শঙ্কা

স্থানীয় পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, অন্যথায় তারা বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি অবৈধভাবে সিলিন্ডারে গ্যাস ভরার এই অনিয়ম চলতে থাকে, তবে ভবিষ্যতে বড় ধরনের গ্যাস সংকটের সৃষ্টি হতে পারে, যা গণপরিবহন ব্যবস্থাকে পুরোপুরি ভেঙে ফেলবে।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে, পরিবহন খাতে এক ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

টেগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়

আশুলিয়ায় ফুটপাতে চলছে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি, নেতৃত্বে স্থানীয় প্রভাবশালী আক্তার!

কোনাবাড়ী নতুন বাজারে পুলিশের মদদেই চলছে অবৈধ গ্যাস ব্যবসা?

প্রকাশিত: ১২:৫৪:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫

গাজীপুর প্রতিনিধি:
গাজীপুরের নতুন বাজার এলাকায় লিটন গ্যাস ডিস্ট্রিবিউটর কোম্পানি লিমিটেড কর্তৃক অবৈধভাবে গ্যাস সিলিন্ডারে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এতে পরিবহন চালকরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন, কারণ সিএনজি স্টেশনগুলোতে পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহ না থাকায় যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।

অবৈধ ব্যবসা, পরিবহন চালকদের দুর্ভোগ

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লিটন টাটা গ্যাস পাম্প থেকে নিয়মিতভাবে সিএনজি সরবরাহের বদলে অবৈধ উপায়ে গ্যাস সিলিন্ডারে ভরে বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে সিএনজি চালিত গণপরিবহন ও অন্যান্য যানবাহনের চালকরা নির্ধারিত মূল্যে গ্যাস পাচ্ছেন না। এতে ক্ষতির মুখে পড়ছেন গণপরিবহন চালক ও মালিকরা, পাশাপাশি যাত্রীদেরও দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

একজন সিএনজি চালক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা গ্যাস নিতে এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করি, কিন্তু গ্যাস পাই না। অথচ, এখানে অবৈধভাবে সিলিন্ডারে গ্যাস ভরে বাইরে বিক্রি করা হচ্ছে। প্রশাসন কিছু বলছে না, তাই এরা যা খুশি তাই করছে।”

প্রশাসন নীরব, পুলিশের সাড়া নেই

ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে নতুন বাজার লিটন টাটা গ্যাস পাম্পে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে প্রায় দশটি গাড়ি গ্যাসের জন্য অপেক্ষা করছে, তবে গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না। এ সময় পাঁচটি গাড়ি আটকে রাখা হয় এবং স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা কোনাবাড়ী থানার সিনিয়র অফিসার মোঃ নজরুল ইসলামকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি অবহিত করেন।

তিনি জানান, “ট্রিপল নাইন থেকে দুটি কল এসেছে, আমরা পুলিশ পাঠাচ্ছি।” কিন্তু দীর্ঘ এক ঘণ্টা অপেক্ষার পরেও পুলিশের কোনো উপস্থিতি দেখা যায়নি। এরপর আবারও ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।

এরপর ট্রিপল নাইন-এ ফোন দিয়ে পুলিশের সহযোগিতা চাওয়া হলে, সেখান থেকে থানায় কথা বলা হয়। তবে দেড় ঘণ্টা অপেক্ষার পরেও পুলিশের কোনো কার্যকর ব্যবস্থা দেখা যায়নি। পুনরায় কোনাবাড়ী থানায় যোগাযোগ করলে জানানো হয় যে, তারা সেনাবাহিনীর সঙ্গে ডিউটিতে আছেন, তাই ঘটনাস্থলে যেতে পারবেন না।

অভিযোগ: পুলিশের মদদেই চলছে অবৈধ গ্যাস ব্যবসা?

স্থানীয়দের অভিযোগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যদি ব্যবস্থা নিত, তাহলে এভাবে দিনের পর দিন অবৈধভাবে গ্যাস বিক্রি সম্ভব হতো না। বরং পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা দেখে বোঝা যাচ্ছে, তারা কোনো না কোনোভাবে এই ব্যবসার সঙ্গে লিয়াজু করে চলছেন।

এক পরিবহন মালিক বলেন, “আমরা পুলিশের সহযোগিতা চাই, কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা নেয় না। এটা স্পষ্ট, তারা এই অবৈধ ব্যবসার পেছনে মদদ দিচ্ছে।”

দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বড় বিপর্যয়ের শঙ্কা

স্থানীয় পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, অন্যথায় তারা বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি অবৈধভাবে সিলিন্ডারে গ্যাস ভরার এই অনিয়ম চলতে থাকে, তবে ভবিষ্যতে বড় ধরনের গ্যাস সংকটের সৃষ্টি হতে পারে, যা গণপরিবহন ব্যবস্থাকে পুরোপুরি ভেঙে ফেলবে।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে, পরিবহন খাতে এক ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগীরা।