০৮:১৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মজুত পর্যাপ্ত, তবুও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ধান বীজ

  • দৈনিক সময়ের কথা
  • প্রকাশিত: ০৫:৫১:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ৩৯ বার দেখা হয়েছে
  • খাগড়াছড়িতে পর্যাপ্ত মজুত থাকা স্বত্ত্বেও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ধান বীজ। মৌসুমের শেষের দিকে হওয়ায় কয়েক জাতের বীজ সংকট রয়েছে, তাই দাম বেড়েছে বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা।

    কৃষকদের অভিযোগ, বাজার পর্যবেক্ষণের অভাবেই আসাদু ব্যবসায়ীরা এ সংকট তৈরি করছেন। দোকানে পর্যাপ্ত বীজ থাকার পরও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ধান বীজ।

    খাগড়াছড়ির বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, দোকানগুলোতে বিভিন্ন কোম্পানির পর্যাপ্ত ধান বীজ রয়েছে। সদরের বাজারে তুলনামূলক কিছুটা দাম নিয়ন্ত্রণে থাকলেও উপজেলাগুলোতে ইচ্ছে মতো দাম নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

    খাগড়াছড়ি সদরের স্বনির্ভর এলাকার কৃষক উল্লাসময় ত্রিপুরা বলেন, আমার তিন কানি ধানের জমি রয়েছে। বাজারে ধান বীজ কিনতে এসেছি। ব্রি ধান ৮১ জাতের বীজ খুঁজছিলাম, এখন সেটি বাজারে নেই।

    কৃষক অনিল ত্রিপুরা জানান, ব্রি ধান ১০০ দুই কেজির প্যাকেট ২৬০ টাকা দরে পাঁচ প্যাকেট ধান বীজ ক্রয় করেছেন। গত বছরের চেয়ে এবারে প্যাকেট প্রতি ৫০ টাকা করে বেশি নেওয়া হচ্ছে।

    সদরের চম্পাঘাট এলাকার কৃষক সুইপ্রু মারমা জানান, বাজারে ধান বীজের সংকট দেখিয়ে দাম বেশি রাখছেন দোকানদাররা। গত বছরের চেয়ে বাজারে হাইব্রিড বীজের দাম কেজি প্রতি ১০০ টাকার চেয়ে বেশি।

    তাইন্দং থেকে খাগড়াছড়িতে ধান বীজ ক্রয় করতে আসা মো. ইসমাইল জানান, প্রতি কেজি হাইব্রিড হীরা-২ জাতের ধান বীজ বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৫২০ টাকা। গত বছর একই জাতের ধান বীজ তিনি ৩২০ টাকা করে ক্রয় করেছিলেন।

    এ নিয়ে খাগড়াছড়ি বাজারের বীজ ব্যবসায়ী জননী বীজ ভাণ্ডারের মালিক মো. ইউসুফ জানান, মৌসুমের শেষের দিক হওয়ায় উচ্চ ফলনশীল দু-একটি জাত শেষ পর্যায়ে। কোম্পানিদের কাছে না থাকায় দাম একটু বেড়েছে।

    মেসার্স ইদ্রিস স্টোরের মালিক মো. সোহেল বলেন, মৌসুমের প্রথম দিকে ডিলাররা বীজ মজুত করে ফেলেন। পরবর্তীতে বেশি দামে বিক্রি করেন ডিলাররা। আমাদের বেশি দামে কিনতে হয় এবং বেশি দামেই বিক্রি করতে হয়।

    জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে খাগড়াছড়িতে ধান বীজের চাহিদা রয়েছে ২৮৪ মেট্রিক টন। চাহিদার ৮৫ শতাংশ বীজ কৃষক তাদের ঘরে সংগ্রহে রেখেছেন। অবশিষ্ট বীজ বাজার থেকে সংগ্রহ করা হয়। সংগ্রহ করা বীজের বেশিরভাগই উচ্চ ফলনশীল জাতের।

    বিএডিসির তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে খাগড়াছড়িতে ৫৫ মেট্রিক টন ধান বীজ আনা হয়েছে। যার মধ্যে উচ্চ ফলনশীল জাতের ২০ মেট্রিক টন এবং উফশী বিভিন্ন জাতের ৩৫ মেট্রিক টন ধান বীজ রয়েছে। বর্তমানে ব্রি ধান ২৮,২৯,৭৪,৮৮,৮৯ এবং ৯২ জাতের প্রায় ৭ মেট্রিক টন ধান বীজ গুদামজাত রয়েছে।

    খাগড়াছড়ি বিএডিসির উপ-সহকারী পরিচালক জুয়েল চাকমা জানান, চলতি মৌসুমে খাগড়াছড়ি জেলায় উচ্চ ফলনশীল এবং উফশী জাতের প্রায় ৩০ মেট্রিক টন ধান বীজ সরকারিভাবে কৃষকদের প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। কৃষকদের মধ্যে ব্রি ধান-১০০ জাতের কিছুটা চাহিদা রয়েছে। তাদের চাহিদা অনুযায়ী দু-একদিনের মধ্যে ২ মেট্রিক টন বীজ আনা হবে। এছাড়া বাজারে বীজের সংকট নেই বলেও জানান তিনি।

টেগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

এবার অ্যাস্টন ভিলার মাঠেও হারল ম্যানসিটি

মজুত পর্যাপ্ত, তবুও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ধান বীজ

প্রকাশিত: ০৫:৫১:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪
  • খাগড়াছড়িতে পর্যাপ্ত মজুত থাকা স্বত্ত্বেও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ধান বীজ। মৌসুমের শেষের দিকে হওয়ায় কয়েক জাতের বীজ সংকট রয়েছে, তাই দাম বেড়েছে বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা।

    কৃষকদের অভিযোগ, বাজার পর্যবেক্ষণের অভাবেই আসাদু ব্যবসায়ীরা এ সংকট তৈরি করছেন। দোকানে পর্যাপ্ত বীজ থাকার পরও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ধান বীজ।

    খাগড়াছড়ির বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, দোকানগুলোতে বিভিন্ন কোম্পানির পর্যাপ্ত ধান বীজ রয়েছে। সদরের বাজারে তুলনামূলক কিছুটা দাম নিয়ন্ত্রণে থাকলেও উপজেলাগুলোতে ইচ্ছে মতো দাম নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

    খাগড়াছড়ি সদরের স্বনির্ভর এলাকার কৃষক উল্লাসময় ত্রিপুরা বলেন, আমার তিন কানি ধানের জমি রয়েছে। বাজারে ধান বীজ কিনতে এসেছি। ব্রি ধান ৮১ জাতের বীজ খুঁজছিলাম, এখন সেটি বাজারে নেই।

    কৃষক অনিল ত্রিপুরা জানান, ব্রি ধান ১০০ দুই কেজির প্যাকেট ২৬০ টাকা দরে পাঁচ প্যাকেট ধান বীজ ক্রয় করেছেন। গত বছরের চেয়ে এবারে প্যাকেট প্রতি ৫০ টাকা করে বেশি নেওয়া হচ্ছে।

    সদরের চম্পাঘাট এলাকার কৃষক সুইপ্রু মারমা জানান, বাজারে ধান বীজের সংকট দেখিয়ে দাম বেশি রাখছেন দোকানদাররা। গত বছরের চেয়ে বাজারে হাইব্রিড বীজের দাম কেজি প্রতি ১০০ টাকার চেয়ে বেশি।

    তাইন্দং থেকে খাগড়াছড়িতে ধান বীজ ক্রয় করতে আসা মো. ইসমাইল জানান, প্রতি কেজি হাইব্রিড হীরা-২ জাতের ধান বীজ বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৫২০ টাকা। গত বছর একই জাতের ধান বীজ তিনি ৩২০ টাকা করে ক্রয় করেছিলেন।

    এ নিয়ে খাগড়াছড়ি বাজারের বীজ ব্যবসায়ী জননী বীজ ভাণ্ডারের মালিক মো. ইউসুফ জানান, মৌসুমের শেষের দিক হওয়ায় উচ্চ ফলনশীল দু-একটি জাত শেষ পর্যায়ে। কোম্পানিদের কাছে না থাকায় দাম একটু বেড়েছে।

    মেসার্স ইদ্রিস স্টোরের মালিক মো. সোহেল বলেন, মৌসুমের প্রথম দিকে ডিলাররা বীজ মজুত করে ফেলেন। পরবর্তীতে বেশি দামে বিক্রি করেন ডিলাররা। আমাদের বেশি দামে কিনতে হয় এবং বেশি দামেই বিক্রি করতে হয়।

    জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে খাগড়াছড়িতে ধান বীজের চাহিদা রয়েছে ২৮৪ মেট্রিক টন। চাহিদার ৮৫ শতাংশ বীজ কৃষক তাদের ঘরে সংগ্রহে রেখেছেন। অবশিষ্ট বীজ বাজার থেকে সংগ্রহ করা হয়। সংগ্রহ করা বীজের বেশিরভাগই উচ্চ ফলনশীল জাতের।

    বিএডিসির তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে খাগড়াছড়িতে ৫৫ মেট্রিক টন ধান বীজ আনা হয়েছে। যার মধ্যে উচ্চ ফলনশীল জাতের ২০ মেট্রিক টন এবং উফশী বিভিন্ন জাতের ৩৫ মেট্রিক টন ধান বীজ রয়েছে। বর্তমানে ব্রি ধান ২৮,২৯,৭৪,৮৮,৮৯ এবং ৯২ জাতের প্রায় ৭ মেট্রিক টন ধান বীজ গুদামজাত রয়েছে।

    খাগড়াছড়ি বিএডিসির উপ-সহকারী পরিচালক জুয়েল চাকমা জানান, চলতি মৌসুমে খাগড়াছড়ি জেলায় উচ্চ ফলনশীল এবং উফশী জাতের প্রায় ৩০ মেট্রিক টন ধান বীজ সরকারিভাবে কৃষকদের প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। কৃষকদের মধ্যে ব্রি ধান-১০০ জাতের কিছুটা চাহিদা রয়েছে। তাদের চাহিদা অনুযায়ী দু-একদিনের মধ্যে ২ মেট্রিক টন বীজ আনা হবে। এছাড়া বাজারে বীজের সংকট নেই বলেও জানান তিনি।