০১:৩৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কমিটি বাতিলের মানববন্ধনে বিএনপির দুই পক্ষের হামলা, আহত ১০

  • দৈনিক সময়ের কথা
  • প্রকাশিত: ০২:৪২:৩৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ২৫ বার দেখা হয়েছে

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় মর্ণেয়া ইউনিয়ন বিএনপির মানববন্ধন কর্মসূচিতে দুই গ্রুপের মধ্যে হামলার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (২১ ডিসেম্বর) উপজেলার খলিফার বাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। হামলায় কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন।

এসময় উভয়পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের দোসরিপনা করার অভিযোগ তুলেছেন।

মর্ণেয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক মীর কাশেম মিঠু ও সদস্যসচিব আব্দুল মাবুদের নেতৃত্বে গঠিত ইউনিয়ন কমিটি ও ওয়ার্ড কমিটি বাতিলের দাবিতে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, মিঠু ও মাবুদ ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির সহযোগী হিসেবে কাজ করছেন। তারা বিগত সময় দলীয় নির্দেশ অমান্য করে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করেছেন। এ ছাড়া, বর্তমানে বিভিন্ন ওয়ার্ড কমিটি গঠনের সময় আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি সমর্থকদের গোপনে বিএনপিতে স্থান দিয়েছেন বলে দাবি করেন তারা।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন- মর্ণেয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি তোজাম্মেল হক ও আব্দুস সোবহান ওরফে খোকা মেম্বার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুর ইসলাম, সাবেক সহসভাপতি সাহাজুল ইসলাম, সাবেক ছাত্রদল সভাপতি তোফাজ্জল হক ও আবু তাহের, সাবেক যুবদল সভাপতি আফসারুল ইসলাম, সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক বাবুল মিয়া, যুবদল সদস্য রিয়াজুল, সাবেক সহ-সভাপতি সাহাজুল ইসলামসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের সাবেক নেতা-কর্মীরা।

মানববন্ধন আয়োজক পক্ষের নেতা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, আমি মর্ণেয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের দুইবারের সভাপতি, উপজেলা ছাত্রদলের দুইবারের সহ-সভাপতি ছিলাম। কিন্তু বর্তমান মর্ণেয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক মিঠু এবং সদস্য সচিব মাবুদ তারা আওয়ামী লীগের দোসর। গত ১৬ বছরে তারা বিএনপির নিয়ম নীতি তোয়াক্কা না করে ওপেনে নৌকা এবং লাঙ্গলের ভোট করেছে। প্রকাশ্যে নৌকা এবং লাঙ্গলের পক্ষে ভোট চেয়েছে ও বক্তব্য দিয়েছে। যার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। কিন্তু তাদেরকেই আবার আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব করা হয়েছে। এই কমিটি স্থগিত করে প্রকৃত জাতীয়তাবাদী চেতনায় বিশ্বাসীদের ভেতরে যারা ত্যাগী, জুলুম নির্যাতনের শিকার এবং সাংগঠনিক তাদেরকে নিয়ে আমরা নতুন করে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি গঠনের জন্য দাবি জানাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, এসব বিষয় আমরা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, মহাসচিব, উপজেলা ও জেলা নেতৃবৃন্দকে প্রমাণসহ উপস্থাপন করেছি। কিন্তু এখনো কোনো প্রতিকার পাইনি। সেকারণে মানববন্ধন করে আমরা আবারো একই দাবি তুলেছি শান্তিপূর্ণভাবে। কিন্তু মিঠু ও মাবুদ সাহেব আওয়ামী দোসরদের নিয়ে আমাদের মানববন্ধনে লাঠিসোঁটা দিয়ে হামলা করেছে। এতে আমাদের অনেক সিনিয়র কর্মী ও নেতা আহত হয়েছেন। এটি খুবই দুঃখজনক। আমরা আশা করি সংগঠনের ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দ বিষয়টি দেখবেন।

তবে মর্ণেয়া ইউনিয়ন বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক মীর কাশেম মিঠু হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, যারা এই মানববন্ধন করেছে তারাই আওয়ামী লীগ। সেকারণেই তাদের বাধা দেওয়া হয়েছে। তারা আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টির দোসর। তারা বিএনপির মধ্যে একটা বিশৃঙ্খলা তৈরির জন্যই মানববন্ধন করেছে।

এ ব্যাপারে রংপুর জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আনিছুর রহমান লাকু বলেন, মর্ণেয়া ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড বিএনপির কমিটি গঠনে অনিয়ম নিয়ে আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়গুলো আমরা যাচাই-বাছাই করছি। মানববন্ধন নিয়ে যে ঘটনা ঘটেছে, সেটাও আমরা তদন্ত করব। তারপর ব্যবস্থা নেব।

টেগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

কমিটি বাতিলের মানববন্ধনে বিএনপির দুই পক্ষের হামলা, আহত ১০

প্রকাশিত: ০২:৪২:৩৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় মর্ণেয়া ইউনিয়ন বিএনপির মানববন্ধন কর্মসূচিতে দুই গ্রুপের মধ্যে হামলার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (২১ ডিসেম্বর) উপজেলার খলিফার বাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। হামলায় কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন।

এসময় উভয়পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের দোসরিপনা করার অভিযোগ তুলেছেন।

মর্ণেয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক মীর কাশেম মিঠু ও সদস্যসচিব আব্দুল মাবুদের নেতৃত্বে গঠিত ইউনিয়ন কমিটি ও ওয়ার্ড কমিটি বাতিলের দাবিতে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, মিঠু ও মাবুদ ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির সহযোগী হিসেবে কাজ করছেন। তারা বিগত সময় দলীয় নির্দেশ অমান্য করে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করেছেন। এ ছাড়া, বর্তমানে বিভিন্ন ওয়ার্ড কমিটি গঠনের সময় আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি সমর্থকদের গোপনে বিএনপিতে স্থান দিয়েছেন বলে দাবি করেন তারা।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন- মর্ণেয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি তোজাম্মেল হক ও আব্দুস সোবহান ওরফে খোকা মেম্বার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুর ইসলাম, সাবেক সহসভাপতি সাহাজুল ইসলাম, সাবেক ছাত্রদল সভাপতি তোফাজ্জল হক ও আবু তাহের, সাবেক যুবদল সভাপতি আফসারুল ইসলাম, সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক বাবুল মিয়া, যুবদল সদস্য রিয়াজুল, সাবেক সহ-সভাপতি সাহাজুল ইসলামসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের সাবেক নেতা-কর্মীরা।

মানববন্ধন আয়োজক পক্ষের নেতা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, আমি মর্ণেয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের দুইবারের সভাপতি, উপজেলা ছাত্রদলের দুইবারের সহ-সভাপতি ছিলাম। কিন্তু বর্তমান মর্ণেয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক মিঠু এবং সদস্য সচিব মাবুদ তারা আওয়ামী লীগের দোসর। গত ১৬ বছরে তারা বিএনপির নিয়ম নীতি তোয়াক্কা না করে ওপেনে নৌকা এবং লাঙ্গলের ভোট করেছে। প্রকাশ্যে নৌকা এবং লাঙ্গলের পক্ষে ভোট চেয়েছে ও বক্তব্য দিয়েছে। যার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। কিন্তু তাদেরকেই আবার আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব করা হয়েছে। এই কমিটি স্থগিত করে প্রকৃত জাতীয়তাবাদী চেতনায় বিশ্বাসীদের ভেতরে যারা ত্যাগী, জুলুম নির্যাতনের শিকার এবং সাংগঠনিক তাদেরকে নিয়ে আমরা নতুন করে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি গঠনের জন্য দাবি জানাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, এসব বিষয় আমরা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, মহাসচিব, উপজেলা ও জেলা নেতৃবৃন্দকে প্রমাণসহ উপস্থাপন করেছি। কিন্তু এখনো কোনো প্রতিকার পাইনি। সেকারণে মানববন্ধন করে আমরা আবারো একই দাবি তুলেছি শান্তিপূর্ণভাবে। কিন্তু মিঠু ও মাবুদ সাহেব আওয়ামী দোসরদের নিয়ে আমাদের মানববন্ধনে লাঠিসোঁটা দিয়ে হামলা করেছে। এতে আমাদের অনেক সিনিয়র কর্মী ও নেতা আহত হয়েছেন। এটি খুবই দুঃখজনক। আমরা আশা করি সংগঠনের ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দ বিষয়টি দেখবেন।

তবে মর্ণেয়া ইউনিয়ন বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক মীর কাশেম মিঠু হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, যারা এই মানববন্ধন করেছে তারাই আওয়ামী লীগ। সেকারণেই তাদের বাধা দেওয়া হয়েছে। তারা আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টির দোসর। তারা বিএনপির মধ্যে একটা বিশৃঙ্খলা তৈরির জন্যই মানববন্ধন করেছে।

এ ব্যাপারে রংপুর জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আনিছুর রহমান লাকু বলেন, মর্ণেয়া ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড বিএনপির কমিটি গঠনে অনিয়ম নিয়ে আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়গুলো আমরা যাচাই-বাছাই করছি। মানববন্ধন নিয়ে যে ঘটনা ঘটেছে, সেটাও আমরা তদন্ত করব। তারপর ব্যবস্থা নেব।